

অর্থনৈতিক অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দীর্ঘদিনের মামলার রায়ে রাজনৈতিক বিভাজন আরও গভীর—পক্ষ-বিপক্ষের তর্ক তুঙ্গে।
ঢাকা, বুধবার — বহুদিন ধরে আলোচিত-সমালোচিত মামলার রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে চলমান মামলার সর্বশেষ রায় আজ আদালত প্রাঙ্গণে ঘোষণা করা হলে তা মুহূর্তের মধ্যেই জাতীয় রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দেয়।
রায় অনুযায়ী, আদালত অর্থনৈতিক অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং রাষ্ট্রের তহবিল ব্যবহারে গুরুতর বিচ্যুতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। এ রায়ের ফলে দেশজুড়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে স্পষ্টভাবে ভাগ-বিভাজন তৈরি হয়েছে। একদল মনে করছে, এই রায় ন্যায়বিচারের এক নতুন উদাহরণ, অন্যদিকে বিরোধী দল বলছে, এটা একটি ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ সিদ্ধান্ত।
রায় ঘোষণার পরপরই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আইনজীবী দল জানায় যে তারা উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে। তাদের দাবি—মামলার তদন্ত ও সাক্ষ্যগ্রহণের সময় অসংখ্য অসঙ্গতি ছিল, যা তারা আপিল আদালতে তুলে ধরবে। অন্যদিকে সরকারপক্ষ বলছে, দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে রায়টি স্বচ্ছভাবে এসেছে, এখানে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য খোঁজার কোনো অবকাশ নেই।
রায় ঘোষণার পর রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সমর্থক ও বিরোধীদের সমাবেশ ছাড়াও পরিস্থিতি কিছু সময়ের জন্য উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বেশ কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও স্লোগানধ্বনিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে—কেউ মনে করছেন আইন সবার জন্য সমান, আবার কেউ মনে করছেন দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ঠিকমতো বিকশিত না হওয়ায় এমন রায় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দলের কাছে এটি একটি বড় ধাক্কা, কারণ দলের অভ্যন্তরে নেতৃত্বস্থানীয়দের অবস্থান এবং ভোটারদের মনস্তত্ত্বে এই রায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে। অন্যদিকে সরকারপক্ষ মনে করছে, রায়টি দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের একটি উদাহরণ হিসেবে জনগণের কাছে ইতিবাচক প্রতিচ্ছবি দেবে।
আন্তর্জাতিক মহলেও রায়টি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিদেশি কূটনীতিকরা বলছেন, বাংলাদেশের আইনের শাসন ও বিচারব্যবস্থা নিয়ে বিশ্বব্যাপী একটি বড় আলোচনার জন্ম দিতে পারে এ রায়। কিছু রাষ্ট্রদূত আদালতের স্বচ্ছতা ও প্রক্রিয়াকে সাধুবাদ জানালেও মানবাধিকার সংগঠনগুলো আবারও বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
সব মিলিয়ে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে এই বহুল আলোচিত রায় বাংলাদেশ রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। আগামী কয়েক সপ্তাহে আপিল প্রক্রিয়া, দলের অবস্থান এবং জনগণের প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করবে—এই রায় দেশের রাজনীতিতে কতটা স্থায়ী প্রভাব ফেলবে।




















