

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বারবার সতর্কতার পর, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মুদ্রানীতিতে কঠোরতা আরোপের নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে। এর মূল লক্ষ্য হলো বাজারে অর্থের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে চাহিদা কমানো এবং মূল্যস্ফীতিকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা।
আইএমএফের সর্বশেষ 'ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক' (অক্টোবর ২০২৫) অনুসারে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের গড় মূল্যস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশে থাকতে পারে, যা সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে রেপো রেটসহ অন্যান্য নীতিগত সুদহার (Policy Rate) উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এখন ঋণের সুদের হার নির্ধারণে আরও স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, যার ফলে ঋণের খরচ বেড়েছে। উচ্চ সুদের হার একদিকে বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করবে, অন্যদিকে ভোক্তাদের খরচ করার প্রবণতা কমিয়ে দেবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই কঠোর মুদ্রানীতি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া, যার ফল পেতে কিছু সময় লাগবে। তবে, একই সাথে সরকারের উচিত বাজার তদারকি জোরদার করা এবং সরবরাহ শৃঙ্খলের বাধাগুলো দূর করা, যা খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ার প্রধান কারণ। আইএমএফ সতর্ক করেছে যে, ব্যাংকিং খাতে চাপ এবং জ্বালানি সরবরাহ সংকট এখনও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বড় বাধা সৃষ্টি করতে পারে, যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাঠামোগত সংস্কার জরুরি।



















